খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: আজ ৮ ডিসেম্বর প্রতিবছরের মতো এবারও খাগড়াছড়ির রামগড়ে হানাদার মুক্ত দিবস পালনের নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ‘৭১-এর এই দিনে হানাদার বাহিনীর কবল থেকে রামগড় মুক্ত হয়। উপজেলা প্রশাসন দিবসটি উপলক্ষে রামগড় পর্যটন পার্কে স্থাপিত বিজয় ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অপর্ণ, শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার আয়োজন রেখেছে। এর মধ্যে সকাল ১০টায় শোভাযাত্রা বেরিয়ে শহীদ ক্যাপ্টেন আবতাবুল কাদের বীর উত্তমের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি রয়েছে।
রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে ইসরাত দিবসটিতে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানিয়ে এলাকাবাসীকে চিঠি দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বাবুল মজুমদার এই প্রতিনিধিকে বলেন, আগামী প্রজম্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে সরকার সচেষ্ট আছে, হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে রামগড়ে প্রতিবছরের মতো নানা কর্মসূচি নেওয়ায় স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের তিনি ধন্যবাদ দেন।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হেমদা রঞ্জন ত্রিপুরা জানান, মুক্তিযুদ্ধের প্রায় শেষের দিকে ৬ ডিসেম্বর মুক্তি বাহিনীর গেরিলা আক্রমণ ও ভারতীয় যুদ্ধ বিমান থেকে রামগড়ের শত্রু ঘাঁটিতে প্রবলভাবে বোমাবর্ষণ হলে পাক সেনারা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে রামগড় ছাড়তে শুরু করে। ৮ ডিসেম্বর ’৭১ পুরোপুরি শত্রুমুক্ত হয় রামগড়। ওই সময় আওয়ামী লীগের অবিসংবাদিত নেতা রামগড় মহকুমা কেন্দ্রীক মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সংগঠক মরহুম সুলতান আহমেদ মুক্তিপাগল জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ভারতীয় শরণার্থী শিবির সাবরুম মহকুমার কাঁঠালছড়ি থেকে বাংলাদেশের পতাকা রামগড় এনে উত্তোলন করেন।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হেমদা রঞ্চন ত্রিপুরা, সুবোধ বিকাশ ত্রিপুরা ও মিন্টু চক্রবর্তীর সঙ্গে আলাপ চারিতায় জানা যায়, স্বাধীনতা যুদ্ধের সেই উত্তাল দিনগুলোতে রামগড়ের মানুষ গড়ে তুলেছিল সংগ্রাম কমিটি। রামগড় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ১৯৭১-এর ১৬ মার্চ রামগড় বাজারের বনবীথি বোর্ডিংয়ে এই কমিটি গঠনের জন্য এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। মরহুম কাজী রুহুল আমীনকে আহবায়ক ও প্রয়াত সাংবাদিক সুবোধ বিকাশ ত্রিপুরাকে যুগ্ম আহবায়ক করে ২১ সদস্যবিশিষ্ট সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয়।
এই কমিটির অন্য সদস্যদের কয়েকজন হলেন, সুরেশ মোহন ত্রিপুরা (অবসর প্রাপ্ত জেলা তথ্য কর্মকর্তা), বনবীথির মালিক মংলাগ্য মারমা, আজিজুর রহমান, যতীন্দ্র কুমার নাথ, কংচাই চেীধুরী (হেড ম্যান)। কমিটি গঠনের পর পরই মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড শুরু করেন।